Tuesday, November 13, 2018

Ekti Monushyotyer Golpo একটি মনুষ্যত্বের গল্প_Short Film Stories

 Ekti Monushyotyer Golpo একটি মনুষ্যত্বের গল্প_Short Film Stories কাহিনী সংক্ষেপঃ   কামরুল হাসান একজন চিত্রশিল্পী ।   সকালে তার ফ্ল্যাটের বারান্দায় চিত্র অঙ্কন করার সময় তিনি একটি মেয়েকে ছাতা মাথায় রাস্তাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন। প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টি সে সময়।বাইরে নির্জন। যানবাহন চলাচল ও বন্ধ।  কামরুল হাসান নিচে নেমে তার সাথে আলাপ করে জানতে পারলেন তার দাদী অজ্ঞান। তিনি দেরি না করে সাবিনার দাদীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। শীতের সকাল। সূর্যের আলো পড়েনা। চারিদিক কিছুটা অন্ধকার দেখাচ্ছে। সাবিনার দাদীকে গাড়িতে তুলে তিনি হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন। পথে কিছুটা দুর্ভোগ হলেও অনেক কষ্টে হাসপাতালে পৌঁছেন। পরে সাবনার মা গার্মেন্টস এর কাজ ছেড়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন। সাবিনার দাদী সুস্থ হয়ে উঠেন।                                                                   চরিত্র লিপি     কামরুল হাসান ( কামরুল) [ বয়স ৩৫ বছর। ভদ্র, মার্জিত । চিত্রশিল্পী। মানবহিতৈষী। মধ্যবিত্ত। গল্পের প্রধান চরিত্র। ]     সাবিনা [ বয়স ৫ বছর। চঞ্চল প্রকৃতির। বেগম রোকেয়ার একমাত্র মেয়ে। ]     বেগম রোকেয়া [ বয়স ৩০ বছর। সাবিনার মা। গারমেন্টস এ চাকরি করেন। নিম্ন-মধ্যবিত্ত। ]     নুরুন নাহার বেগম [ ৬৫/৭০ বছর। সাবিনার দাদী।     ডাক্তার [ ১ জন ডাক্তার]     নার্স [ ২ জন নার্স।                                                                                                                                      চিত্রনাট্য   দৃশ্য-১ । কামরুল হাসানের বাড়ির বারান্দা।শীতকাল।ঝড়-বৃষ্টি। সকাল ১০টা   কামরুল হাসান বাড়ির বারান্দায় বসে চিত্র আঁকছেন। কিন্তু প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টির কারণে চিত্র আঁকা বন্ধ করে দিলেন। পাশের ফ্ল্যাটের বারান্দায় একটি মেয়েকে দেখতে পেলেন। মেয়েটি মুহূর্তে বাড়ির ভিতরে ঢুকে পড়ল।রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। লোকজন ও দেখা যায় না।নির্জন। কিছুক্ষণ পর তিনি দেখলেন, মেয়েটি  রাস্তার পাশে একটি ছাতা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কামরুল একটি ছাতা নিলেন।ঘরের দরজা খুললেন।     দৃশ্য-২ । কামরুলের বাড়ির সিঁড়ি/নিচ তলা ।   ২য় তলা থেকে কামরুল সিঁড়ি বেয়ে ছাতাটি হাতে নিয়ে নিচে নেমে পড়লেন। বৃষ্টি আর খুব জোরে বাতাস বইতে আছে। মেইন গেট খুলেই কামরুল দেখলেন রাস্তায় পানি জমে আছে। কামরুলের বাড়ির বাইরে সামনে একটি মধ্য বয়সী আম গাছ। তিনি ছাতা ফুটিয়ে আম গাছের পাশ দিয়ে রাস্তা পার হয়ে চলে যাচ্ছেন মেয়েটির কাছে।   দৃশ্য-৩ । সাবিনাদের বাড়ির গেটে রাস্তার পাশে।   সাবিনা তখনো রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে যাতে কোনও মানুষের সাক্ষাত পায়। রাস্তায় যান চলাচল একেবারে বন্ধ। নির্জন পরিবেশ। সকাল ১০ বাজলেও মনে হচ্ছে যেন সন্ধ্যা হয়ে গেছে। আকাশে সূর্যের আলো নেই। রাস্তায় বৃষ্টি জমে গেছে। কামরুল পৌঁছে গেছেন সাবিনার কাছে।এতক্ষণে তিনি দেখলেন মেয়েটি কাঁদছে। চোখ দিয়ে জল পড়ছে।     কামরুলঃ  কাঁদছ কেন মামুনি? কি হয়েছে? এতো ঝড়-বৃষ্টিতে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছ কেন ?  সাবিনাঃ     ঊঁ...ঊঁ...ঊঁ । দাদী বিছানায়। কোন কথা বলছেনা। ( সাবিনা উচ্চস্বরে কাঁদছে)   কামরুলঃ কি হয়েছে তোমার দাদীর? চলো দেখি। ভিতরে যায়।     দৃশ্য-৪ । সাবিনাদের বাড়ির ভেতর।   একটি চোকির বিছানা। সাবিনার দাদী বিছানায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। বিছানার একদিকে একটি টেবিল পাশেই একটি চেয়ার। চেয়ারে  একটি বিড়াল বসে আছে। কামরুল ছাতাটি বাইরে ঝুলিয়ে রাখলেন। সাবিনা বিড়ালটি কোলে নিয়ে দাদীর পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে আর কাদঁছে।     সাবিনাঃ দাদী ওঠো, ও দাদী, দাদী।   কামরুলঃ  এই যে শুনছেন , কথা বলুন।   কামরুল কোন সাড়া-শব্দ না পেয়ে সাবিনার দাদীর কপালে হাত দিলেন।  কামরুলঃ ওমা, এতো জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে। তোমার বাবা-মা কোথায়?   সাবিনাঃ বাবা নেই, মামুনি চাকরিতে ।   কামরুলঃ ওহ।   (কামরুল পকেট থেকে মোবাইল বের করে ডাক্তারকে ফোন দিলেন। কয়েকবার দিয়ে যাচ্ছেন। ফোন রিসিভ হচ্ছে না।)   কামরুলঃ মামুনি , তুমি একটু অপেক্ষা কর। আমি এক্ষুনি বাইরে থেকে আসছি।    দৃশ্য-৫ । কামরুলের বাড়ির নিচতলা।   কামরুলের বাড়ির নিচতলায় তার একটি মাইক্রো রাখা আছে। তিনি নিজেই গাড়ি চালান। ড্রাইভারের প্রয়োজন হয়না। ছাতাটি গাড়ির ভিতরে রেখে দিলেন। বাড়ির সামনে আম গাছটির পাশ দিয়ে কামরুল গাড়ি নিয়ে চলে গেলেন সাবিনাদের বাড়ির বাইরে রাস্তায়।     দৃশ্য-৬ । সাবিনাদের বাড়ির বাইরে রাস্তায়।   খুব জোরে তখনও বৃষ্টি পড়েই চলেছে। কামরুল একা অনেক কষ্টে সাবিনার দাদীকে গাড়িতে তুললেন । তার কোটটা বৃষ্টির পানিতে ভিজে গেছে। মাথার চুল গুলো ও পানিতে ভিজে গেছে। সাবিনা ছাতা মাথায় বিড়ালটি কোলে নিয়ে গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে আছে। কেঁদে তার মুখখানা ও শুকিয়ে গেছে।   কামরুলঃ মামুনি গাড়িতে ওঠো। আমাদের এক্ষুণি হাসপাতালে যেতে হবে। বিড়ালটি বাড়িতে                    রাখে এসো।                  সাবিনাঃ না, মিনু ও আমার সঙ্গে যাবে।   কামরুলঃ আচ্ছা, ঠিক আছে। ওঠো আমাদের শীঘ্রই যেতে হবে।   সাবিনাঃ আমি তো একা উঠতে পারছিনা।  কামরুলঃ বিড়ালটা দাও। দেখি তোমার ২টো বাড়াও। ( কামরুল তাদেরকে গাড়িতে উঠিয়েই ,                  গাড়ি স্টার্ট দিলেন।      দৃশ্য-৭ । মধ্য-রাস্তায়   ঝমঝম করে বৃষ্টি পড়েই চলেছে। অনেক জোরে বাতাস বইছে। মাঝেমাঝে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। সাবিনা বিদ্যুৎ চমকানো দেখে ভয় পেয়ে গেছে। কামরুল তাকে নিজের কোলের কাছে করে নিয়েছেন । আশেপাশে কোন লোকজন ও দেখা যায় না। যান চলাচল ও বন্ধ। রাস্তায় অনেক পানি জমে আছে। হঠাত, গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গেল। গাড়ি আর চলেনা। কামরুল গাড়ি থেকে নেমে ইঞ্জিন চেক করলেন।     কামরুলঃ সবকিছু ত ঠিক আছে , হঠাত গাড়ি যে কেন বন্ধ হল কিছু বুঝিনা।   ( কিছুক্ষণ পর গাড়ি স্টার্ট দিলেন । গাড়ি আবার চলতে লাগল।)    দৃশ্য-৮ । হাসপাতাল   গাড়ি হাসপাতালে পৌঁছে গেছে। হাসপাতালের ভিতর অনেক মানুষ। কিন্তু বাইরে নির্জন। এতক্ষণে বাতাসটা কমেছে। কিন্তু অবিরামভাবে বৃষ্টি পড়েই চলেছে। কামরুল গাড়ি থামিয়ে গাড়ি থেকে সাবিনা আর মিনুকে নামালেন। ২ জন নার্স এসে সাবিনার দাদীকে একটি কেবিনে নিয়ে গেল।     কামরুলঃ ডাক্তার, যেকোন ভাবেই তাকে সুস্থ করে তুলুন। যত টাকা লাগে আমি দেব।   ডাক্তারঃ দেখুন , সুস্থ করার মালিক স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা । আপনারা বাইরে বসুন , আমি দেখছি।     দৃশ্য-৯। ডাক্তারের চেম্বার।   সাবিনা তার বিড়ালটি কোলে নিয়ে বারান্দায় কামরুল হাসানের পাশে বসে আছে। ডাক্তার তার চেম্বারে বসে আছেন। কামরুল হাসান ডাক্তারের চেম্বারে গেলেন।     কামরুলঃ কি হয়েছে ডাক্তার? তার কি জ্ঞান ফিরেছে?  ডাক্তারঃ রোগী এখন ও অজ্ঞান। ভয়ের কোন কারণ নেই। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জ্ঞান ফিরবে আশা                করা যায়। এই নিন, আমি ওষুধপত্র লিখে দিয়েছি।   কামরুলঃ ধন্যবাদ ডাক্তার।     দৃশ্য-১০। হাসপাতালের ভিতরে বারান্দায়। দুপুর ২টা।   হাসপাতালের বারান্দায় কামরুল হাসান ও সাবিনা তার বিড়ালটি কোলে নিয়ে বসে আছে। আশেপাশে কিছুটা লোকের ভিড় কমেছে। বাইরে অন্ধকারটা কমেছে। কিছুটা সূর্যের আলো পরতে শুরু করেছে। কিন্তু অল্প অল্প বৃষ্টি তখন ও পড়ে চলেছে। কামরুল বাইরে দেখলেন রাস্তায় যানবাহন চলতে শুরু করেছে। কামরুলের কোটটা ভিজে আছে। কিন্তু সাবিনাকে বৃষ্টিতে ভিজতে দেননি। সাবিনার কান্না কিছুটা কমেছে।    সাবিনাঃ উঁ, উঁ, উঁ, আমি দাদীর কাছে যাব।   কামরুলঃ আমরা এক্ষুণি যাব, মামুনি। আচ্ছা, তোমার আম্মুর কোন ফোন নাম্বার নেই?  সাবিনাঃ আছে। ০২৯৯৩   কামরুলঃ হ্যালো! ( ফোন দিয়ে)   পুরুষ কণ্ঠঃ বলুন , কাকে চাই?   কামরুলঃ তোমারা আম্মুর নাম কি? (সাবিনাকে) ( ফোন দূরে সরিয়ে)   সাবিনাঃ বেগম রোকেয়া।   কামরুলঃ বেগম রোকেয়া নামে একজন ভদ্র মহিলা.........  পুরুষ কণ্ঠঃ ফোনটা হোল্ড করে রাখুন , দিচ্ছি।     (কাম্রুল হাসান সবকিছু তাকে খুলে বললেন। ভাগ্যক্রমে বেগম রোকেয়া হাসপাতালের পাশেই একটি গার্মেন্টস এ চাকরি করতেন । তিনি দ্রুত হাস্পাতালে ছুটে আসলেন।)    বেগম রোকেয়াঃ কি বলে যে আপনাকে ধন্যবাদ দিব ভাষা খুঁজে পাইনা। অভাবী সংসারে আর কতটা করব, বলুন। প্রতিদিন বাসে এতোটাপথ গার্মেন্টস এ যেতে হয়। গতকাল রাতে প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টির কারণে বাস চলাচল বন্ধ ছিল। একা হঁটে বাড়ি ফিরার সাহস পায়নি।   কামরুলঃ ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করবেন না। বিপদের সময় প্রতিবেশী প্রতিবেশীকে দেখবেনা তো কে দেখবে , বলুন!
একটি মনুষ্যত্বের গল্প_Short Film Stories_BD Films Info

কাহিনী সংক্ষেপঃ
কামরুল হাসান একজন চিত্রশিল্পী ।   সকালে তার ফ্ল্যাটের বারান্দায় চিত্র অঙ্কন করার সময় তিনি একটি মেয়েকে ছাতা মাথায় রাস্তাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন। প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টি সে সময়।বাইরে নির্জন। যানবাহন চলাচল ও বন্ধ।  কামরুল হাসান নিচে নেমে তার সাথে আলাপ করে জানতে পারলেন তার দাদী অজ্ঞান। তিনি দেরি না করে সাবিনার দাদীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। শীতের সকাল। সূর্যের আলো পড়েনা। চারিদিক কিছুটা অন্ধকার দেখাচ্ছে। সাবিনার দাদীকে গাড়িতে তুলে তিনি হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন। পথে কিছুটা দুর্ভোগ হলেও অনেক কষ্টে হাসপাতালে পৌঁছেন। পরে সাবনার মা গার্মেন্টস এর কাজ ছেড়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন। সাবিনার দাদী সুস্থ হয়ে উঠেন।


                                                             চরিত্র লিপি


কামরুল হাসান ( কামরুল) [ বয়স ৩৫ বছর। ভদ্র, মার্জিত । চিত্রশিল্পী। মানবহিতৈষী। মধ্যবিত্ত। গল্পের প্রধান চরিত্র। ]


সাবিনা [ বয়স ৫ বছর। চঞ্চল প্রকৃতির। বেগম রোকেয়ার একমাত্র মেয়ে। ]


বেগম রোকেয়া [ বয়স ৩০ বছর। সাবিনার মা। গারমেন্টস এ চাকরি করেন। নিম্ন-মধ্যবিত্ত। ]


নুরুন নাহার বেগম [ ৬৫/৭০ বছর। সাবিনার দাদী।


ডাক্তার [ ১ জন ডাক্তার]


নার্স [ ২ জন নার্স।


                                        
                                              
                                    চিত্রনাট্য
দৃশ্য-১ । কামরুল হাসানের বাড়ির বারান্দা।শীতকাল।ঝড়-বৃষ্টি। সকাল ১০টা
কামরুল হাসান বাড়ির বারান্দায় বসে চিত্র আঁকছেন। কিন্তু প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টির কারণে চিত্র আঁকা বন্ধ করে দিলেন। পাশের ফ্ল্যাটের বারান্দায় একটি মেয়েকে দেখতে পেলেন। মেয়েটি মুহূর্তে বাড়ির ভিতরে ঢুকে পড়ল।রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। লোকজন ও দেখা যায় না।নির্জন। কিছুক্ষণ পর তিনি দেখলেন, মেয়েটি  রাস্তার পাশে একটি ছাতা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কামরুল একটি ছাতা নিলেন।ঘরের দরজা খুললেন।


দৃশ্য-২ । কামরুলের বাড়ির সিঁড়ি/নিচ তলা ।
২য় তলা থেকে কামরুল সিঁড়ি বেয়ে ছাতাটি হাতে নিয়ে নিচে নেমে পড়লেন। বৃষ্টি আর খুব জোরে বাতাস বইতে আছে। মেইন গেট খুলেই কামরুল দেখলেন রাস্তায় পানি জমে আছে। কামরুলের বাড়ির বাইরে সামনে একটি মধ্য বয়সী আম গাছ। তিনি ছাতা ফুটিয়ে আম গাছের পাশ দিয়ে রাস্তা পার হয়ে চলে যাচ্ছেন মেয়েটির কাছে।
দৃশ্য-৩ । সাবিনাদের বাড়ির গেটে রাস্তার পাশে।
সাবিনা তখনো রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে যাতে কোনও মানুষের সাক্ষাত পায়। রাস্তায় যান চলাচল একেবারে বন্ধ। নির্জন পরিবেশ। সকাল ১০ বাজলেও মনে হচ্ছে যেন সন্ধ্যা হয়ে গেছে। আকাশে সূর্যের আলো নেই। রাস্তায় বৃষ্টি জমে গেছে। কামরুল পৌঁছে গেছেন সাবিনার কাছে।এতক্ষণে তিনি দেখলেন মেয়েটি কাঁদছে। চোখ দিয়ে জল পড়ছে।


কামরুলঃ  কাঁদছ কেন মামুনি? কি হয়েছে? এতো ঝড়-বৃষ্টিতে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছ কেন ?
সাবিনাঃ     ঊঁ...ঊঁ...ঊঁ । দাদী বিছানায়। কোন কথা বলছেনা। ( সাবিনা উচ্চস্বরে কাঁদছে)
কামরুলঃ কি হয়েছে তোমার দাদীর? চলো দেখি। ভিতরে যায়।


দৃশ্য-৪ । সাবিনাদের বাড়ির ভেতর।
একটি চোকির বিছানা। সাবিনার দাদী বিছানায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। বিছানার একদিকে একটি টেবিল পাশেই একটি চেয়ার। চেয়ারে  একটি বিড়াল বসে আছে। কামরুল ছাতাটি বাইরে ঝুলিয়ে রাখলেন। সাবিনা বিড়ালটি কোলে নিয়ে দাদীর পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে আর কাদঁছে।


সাবিনাঃ দাদী ওঠো, ও দাদী, দাদী।
কামরুলঃ  এই যে শুনছেন , কথা বলুন।
কামরুল কোন সাড়া-শব্দ না পেয়ে সাবিনার দাদীর কপালে হাত দিলেন।
কামরুলঃ ওমা, এতো জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে। তোমার বাবা-মা কোথায়?
সাবিনাঃ বাবা নেই, মামুনি চাকরিতে ।
কামরুলঃ ওহ।
(কামরুল পকেট থেকে মোবাইল বের করে ডাক্তারকে ফোন দিলেন। কয়েকবার দিয়ে যাচ্ছেন। ফোন রিসিভ হচ্ছে না।)
কামরুলঃ মামুনি , তুমি একটু অপেক্ষা কর। আমি এক্ষুনি বাইরে থেকে আসছি।


দৃশ্য-৫ । কামরুলের বাড়ির নিচতলা।
কামরুলের বাড়ির নিচতলায় তার একটি মাইক্রো রাখা আছে। তিনি নিজেই গাড়ি চালান। ড্রাইভারের প্রয়োজন হয়না। ছাতাটি গাড়ির ভিতরে রেখে দিলেন। বাড়ির সামনে আম গাছটির পাশ দিয়ে কামরুল গাড়ি নিয়ে চলে গেলেন সাবিনাদের বাড়ির বাইরে রাস্তায়।


দৃশ্য-৬ । সাবিনাদের বাড়ির বাইরে রাস্তায়।
খুব জোরে তখনও বৃষ্টি পড়েই চলেছে। কামরুল একা অনেক কষ্টে সাবিনার দাদীকে গাড়িতে তুললেন । তার কোটটা বৃষ্টির পানিতে ভিজে গেছে। মাথার চুল গুলো ও পানিতে ভিজে গেছে। সাবিনা ছাতা মাথায় বিড়ালটি কোলে নিয়ে গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে আছে। কেঁদে তার মুখখানা ও শুকিয়ে গেছে।
কামরুলঃ মামুনি গাড়িতে ওঠো। আমাদের এক্ষুণি হাসপাতালে যেতে হবে। বিড়ালটি বাড়িতে  
               রাখে এসো।         
সাবিনাঃ না, মিনু ও আমার সঙ্গে যাবে।
কামরুলঃ আচ্ছা, ঠিক আছে। ওঠো আমাদের শীঘ্রই যেতে হবে।
সাবিনাঃ আমি তো একা উঠতে পারছিনা।
কামরুলঃ বিড়ালটা দাও। দেখি তোমার ২টো বাড়াও। ( কামরুল তাদেরকে গাড়িতে উঠিয়েই ,
              গাড়ি স্টার্ট দিলেন।
দৃশ্য-৭ । মধ্য-রাস্তায়
ঝমঝম করে বৃষ্টি পড়েই চলেছে। অনেক জোরে বাতাস বইছে। মাঝেমাঝে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। সাবিনা বিদ্যুৎ চমকানো দেখে ভয় পেয়ে গেছে। কামরুল তাকে নিজের কোলের কাছে করে নিয়েছেন । আশেপাশে কোন লোকজন ও দেখা যায় না। যান চলাচল ও বন্ধ। রাস্তায় অনেক পানি জমে আছে। হঠাত, গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গেল। গাড়ি আর চলেনা। কামরুল গাড়ি থেকে নেমে ইঞ্জিন চেক করলেন।


কামরুলঃ সবকিছু ত ঠিক আছে , হঠাত গাড়ি যে কেন বন্ধ হল কিছু বুঝিনা।
( কিছুক্ষণ পর গাড়ি স্টার্ট দিলেন । গাড়ি আবার চলতে লাগল।)


দৃশ্য-৮ । হাসপাতাল
গাড়ি হাসপাতালে পৌঁছে গেছে। হাসপাতালের ভিতর অনেক মানুষ। কিন্তু বাইরে নির্জন। এতক্ষণে বাতাসটা কমেছে। কিন্তু অবিরামভাবে বৃষ্টি পড়েই চলেছে। কামরুল গাড়ি থামিয়ে গাড়ি থেকে সাবিনা আর মিনুকে নামালেন। ২ জন নার্স এসে সাবিনার দাদীকে একটি কেবিনে নিয়ে গেল।


কামরুলঃ ডাক্তার, যেকোন ভাবেই তাকে সুস্থ করে তুলুন। যত টাকা লাগে আমি দেব।
ডাক্তারঃ দেখুন , সুস্থ করার মালিক স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা । আপনারা বাইরে বসুন , আমি দেখছি।


দৃশ্য-৯। ডাক্তারের চেম্বার।
সাবিনা তার বিড়ালটি কোলে নিয়ে বারান্দায় কামরুল হাসানের পাশে বসে আছে। ডাক্তার তার চেম্বারে বসে আছেন। কামরুল হাসান ডাক্তারের চেম্বারে গেলেন।


কামরুলঃ কি হয়েছে ডাক্তার? তার কি জ্ঞান ফিরেছে?
ডাক্তারঃ রোগী এখন ও অজ্ঞান। ভয়ের কোন কারণ নেই। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জ্ঞান ফিরবে আশা
             করা যায়। এই নিন, আমি ওষুধপত্র লিখে দিয়েছি।
কামরুলঃ ধন্যবাদ ডাক্তার।


দৃশ্য-১০। হাসপাতালের ভিতরে বারান্দায়। দুপুর ২টা।
হাসপাতালের বারান্দায় কামরুল হাসান ও সাবিনা তার বিড়ালটি কোলে নিয়ে বসে আছে। আশেপাশে কিছুটা লোকের ভিড় কমেছে। বাইরে অন্ধকারটা কমেছে। কিছুটা সূর্যের আলো পরতে শুরু করেছে। কিন্তু অল্প অল্প বৃষ্টি তখন ও পড়ে চলেছে। কামরুল বাইরে দেখলেন রাস্তায় যানবাহন চলতে শুরু করেছে। কামরুলের কোটটা ভিজে আছে। কিন্তু সাবিনাকে বৃষ্টিতে ভিজতে দেননি। সাবিনার কান্না কিছুটা কমেছে।


সাবিনাঃ উঁ, উঁ, উঁ, আমি দাদীর কাছে যাব।
কামরুলঃ আমরা এক্ষুণি যাব, মামুনি। আচ্ছা, তোমার আম্মুর কোন ফোন নাম্বার নেই?
সাবিনাঃ আছে। ০২৯৯৩
কামরুলঃ হ্যালো! ( ফোন দিয়ে)
পুরুষ কণ্ঠঃ বলুন , কাকে চাই?
কামরুলঃ তোমারা আম্মুর নাম কি? (সাবিনাকে) ( ফোন দূরে সরিয়ে)
সাবিনাঃ বেগম রোকেয়া।
কামরুলঃ বেগম রোকেয়া নামে একজন ভদ্র মহিলা.........
পুরুষ কণ্ঠঃ ফোনটা হোল্ড করে রাখুন , দিচ্ছি।


(কাম্রুল হাসান সবকিছু তাকে খুলে বললেন। ভাগ্যক্রমে বেগম রোকেয়া হাসপাতালের পাশেই একটি গার্মেন্টস এ চাকরি করতেন । তিনি দ্রুত হাস্পাতালে ছুটে আসলেন।)  
বেগম রোকেয়াঃ কি বলে যে আপনাকে ধন্যবাদ দিব ভাষা খুঁজে পাইনা। অভাবী সংসারে আর কতটা করব, বলুন। প্রতিদিন বাসে এতোটাপথ গার্মেন্টস এ যেতে হয়। গতকাল রাতে প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টির কারণে বাস চলাচল বন্ধ ছিল। একা হঁটে বাড়ি ফিরার সাহস পায়নি।
কামরুলঃ ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করবেন না। বিপদের সময় প্রতিবেশী প্রতিবেশীকে দেখবেনা তো কে দেখবে , বলুন!


SHARE THIS