মানুষ মাত্রই স্বার্থপর।
স্বার্থের জন্য সবাই সবার জীবনকে প্রাধান্য দেয়। অনেকে আমার বক্তব্য সমর্থন করবেন
না , জানি। কিন্তু এ কথা মানতে হবে যে , সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সবাই নিজের সম্পর্কে
ভাবেন।জীবনটা সত্যি আল্লাহর পক্ষ থেকে দেওয়া এক মহামুল্যবান সম্পদ। এ জীবনটা ধ্বংস
করার জন্য দেওয়া হয়নি। জীবন নিয়ে ভাবে ক জন। যারা ভাবেন তারা নিজের জীবনকেই
প্রাধান্য দেন। এ পৃথিবীতে একা এসেছি একা চলে যেতে হবে। কেও সাথে যাবেনা । এ
উপলব্ধি টুকু যদি কোন ব্যক্তি বুঝত তাহলে তার দ্বারা এতো অশান্তি, সম্পর্কের
বিচ্ছেদ , দূর্বলদের প্রতি ক্ষমতা দেখান , সম্পদের প্রতি মোহ কোনদিন হৃদয়ে আশা
বাঁধতে পারতনা। মানুষ কি একবার ও ভাবেনা যে, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্ভিদ, প্রাণী ,
জীবজন্তু থেকে শুরু করে সব চেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী মানুষকে আল্লাহ কেন সৃষ্টি
করেছেন? তারা যদি ভাবত, কোনদিন সে তার আদর্শকে বিসর্জন দিতে পারতনা। আল্লাহর এ
অসীম মহাকাশ কি তাদের মনে কোন ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেনা? আজকের দিনে মানুষ
কি লিখে , আর কি বক্তব্য রাখে তার মর্মার্থ হয়তো আজ তার আশেপাশের লোকজন খুব প্রাধাণ্য
দেয়। কিন্তু এমন এক সময় আসবে যখন কেও কাওকে চিনবেনা ,কেও কারো জন্য অপেক্ষা
করবেনা। আর এটাই চিরন্তন সত্য। সত্যকে মাঝে মাঝে গোপন রাখা যায়, কিন্তু চিরদিন তা
গোপন থাকেনা। সত্য এক সময় না এক সময়
প্রকাশ পাবেই।যাক যেখানে আমার অধিকার নেই , সেখানে প্রবেশ করা অনুচিত।
জীবন জুদ্ধে মাত্র দুইটা জিনিসের জন্য মানুষ
স্বার্থপর হয়ে জাচ্ছে । প্রথমটি হল তার সন্তান-সন্ততি আর দ্বিতীয়টি হল তার সম্পদ। সম্পদের
জন্য সে আজ ছুটছে লোক-লোকান্তরে ।সম্পদই মানুষের জীবনকে এমন এক পর্যায়ে নিয়ে গেছে
যে, এখন তার প্রমাণ স্বচোক্ষে দেখা যাচ্ছে । অর্থ-সম্পদের জন্য সে আজ পশুতে পরিনত
হয়ে গেছে । পৃথিবীতে যত অশান্তি তৈরী হচ্ছে তার মূলে রয়েছে অর্থ-সম্পদ। তাইতো ,
মীর মশাররফ হোসেন বলেছিলেন, “ হাইরে পাতকি অর্থ তুই সকল অনর্থের মূল”। সীমার কেন
ঈমাম হোসাইন (রাঃ) কে হত্যা করেছিল ? শুধু অর্থের জন্য।
আমরা জানি যে, মানুষ
মানুষের জন্য । কিন্তু এর প্রমাণ আজ কোথায়? সারাদিন দূর্বল, অনাহারে থাকা মানুষ
কাজ করে যখন বাড়ি ফিরে তখন সে নিজের চোক্ষে দেখতে পাই তার মালিক তাকে অপর্যাপ্ত
অর্থ দিচ্ছে। তখন সে কেঁদে কেঁদে মনে মনে বলে ‘আহ! আমার যদি অর্থ থাকত
তাহলে............। স্বার্থপর
মানুষ সব সময় নিজের স্বার্থের কথাই চিন্তা করে। তারা দেশের
শত্রু , তারা পৃথিবীর শ্ত্রু। দেখুন, প্রাচীনকাল থেকেই দূর্বলদের ওপর সবলরা আক্রমণ
করত, অত্যাচার ,নির্যাতন করত। নিজের স্বার্থকে
হাসিল করার জন্য তারা মনে প্রাণে প্রচেষ্টা চালাত । পৃথিবী
আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে । আমরা যাতে পৃথিবীর স্বার্থে কাজ করি। কিন্তু
বাস্তবে এর কোন প্রমাণই পাওয়া যাইনা। আমরা দেশের স্বার্থে , পৃথিবীর স্বার্থে যদি
কাজ করি তাহলে উন্নতি হবে দেশের , উন্নতি হবে পৃথিবীর। গড়ে উঠবে এক নতুন পৃথিবী।
আজ পৃথিবী আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে । সে কি আশা করছে আর আমরা তাকে কি উপহার দিচ্ছি?
মানুষ দিকে দিকে ছুটছে শুধু তার অর্থ সম্পদ বাড়ানোর জন্য । একবার সে যদি ভাবতো এ
জীবনটা দুইদিনের জন্য আজ আছি ত কাল নাও থাকতে পারি । আমার জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে
আমি বলছি, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, একদিন ছিল যে দিন
আমি ভাবতে পারিনি যে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারব। যা হোক আল্লাহর অশেষ
ইচ্ছাই ঢাবিতে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি।
যা হোক নিজের অজান্তে
অনেক কিছু বলে ফেললাম। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক লেখাতে আমি খুব অদক্ষ। কেও যদি
কোন ভুল পেয়ে থাকেন মেহেরবাণী করে ক্ষমা করে দিবেন। জীবনের প্রত্যেকটা মুহূর্তে যে
অহরহ ঘটনাগুলো লক্ষ্য করা যায় সে গুলোর মধ্যেই স্বার্থপরতা কথাটা লুকিয়ে আছে। অনেকে
হয়ত দেখতে পাচ্ছেন অনেকে দেখতে পাচ্ছেন না। একটু লক্ষ্য করুন নিজেই নিজের
দাম্ভিকতার কথা স্বচোক্ষে দেখতে পাবেন । আজ হয়ত অনেকে নিজেদের জীবন নিয়েই চিন্তা ,
ভাবনা করছেন। করুন , এতে দোষ দেবার কিছু নাই । তবে একটা কথা বলব আল্লাহ মানুষ
সৃষ্টি করেছেন । তাঁর একটা নিশ্চয়ই উদ্দেশ্য আছে । আমাদের ও উদ্দেশ্য নিয়েই কাজ
করতে হবে নিজের লাভের জন্য কিন্তু যাতে
অন্যের কোন ক্ষতি না হয় । সে দিকেও একটু হলেও নজর দিতে হবে । নাহলে ‘মানুষ মানুষের
জন্য’ , ‘ সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই’ এ সমস্ত উক্তিগুলো মিথ্যা হয়ে
যাবে । নিশ্চয়ই আমরা নিজেদের নিয়ে চিন্তা করব । তাই বলে মানুষের প্রাপ্য নষ্ট করার
অধিকার আমাদের নেই। ধনী-গরিব বৈষম্য থাকতেই পারে। তাই বলে গরিবদের ওপর নির্যাতন
করা কোন অধিকার নয়। কারন তারাও ত মানুষ । মানুষ মানুষের জন্য
কাজ করবে এটাইত ‘মানবতা’ ।
তাই আমি বলতে চাই , আসুন আমরা মানবতার জন্য কাজ করি। পৃথিবীর
স্বার্থে কাজ করি । কারন পৃথিবী আমাদের দিকে চেয়ে আছে। স্বার্থাণ্বেষী হতে পারে
কেবল পৃথিবী অন্য কেও না। স্বার্থাণ্বেষী
পৃথিবীর জন্য কি আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারিনা ?